ডাল্টনের পরমাণুবাদ || পলিটেকনিক এর রসায়ন

ডাল্টনের পরমাণুবাদ এই বিষয়টি “বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড” এর, “পলিটেকনিক” টেকনোলোজিগুলোর, রসায়ন (৬৫৯১৩) সাবজেক্ট এর অংশ। এছাড়া অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থার রসায়ন পাঠ্যক্রমেও রয়েছে।

 

ডাল্টনের পরমাণুবাদ

 

প্রাচীন গ্রীসে আজ থেকে প্রায় ২৫০০ বছর পূর্বে লুসিপাস ও তার ছাত্র ডেমোক্রিটাস মত প্রকাশ করেন যে, সব পদার্থ ুদ্র ুদ্র অবিভাজ্য অংশ দ্বারা গঠিত । ডেমোক্রিটাস এ অবিভাজ্য অংশের নাম দেন atoma । এ শব্দ দুটি গ্রিক শব্দ a(not) এবং temnein (to cut) হতে উদ্ভূত । অর্থাৎ ডেমোক্রিটাসের মতে, পদার্থকে ভাঙতে ভাঙতে এমন এক অবস্থানে পৌছা সম্ভব যখন তাকে আর ভাগ করা সম্ভব নয় । কিন্তু এরিস্টটল এ মতবাদের বিরোধিতা করেন । ফলে এ মতবাদ তখন চাপা পড়ে যায় । ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীর দিকে ডেমোক্রিটাসের ও লুসিপাস এর মতবাদ সমর্থন লাভ করে । অবশেষে ব্রিটিশ স্কুল শিক্ষক জন ডাল্টন এ মতবাদকে বৈজ্ঞানিক মতবাদ হিসেবে প্রকাশ করেন ।

 

ডাল্টনের পরমাণুবাদ

এ মতবাদের স্বীকার্যসমূহ নিম্নরূপঃ

১. প্রত্যেক পদার্থ পরমানু নামক অতি ুদ্র কণা দ্বারা গঠিত ।

২. একই পদার্থের পরমানুসমূহ প্রকৃতিতে ভরে ও ধর্মে একই ।

৩. ভিন্ন ভিন্ন পদার্থের পরমানুসমূহ প্রকৃতিতে ভরে ও ধর্মে ভিন্ন ভিন্ন ।

৪. পরমানু অবিবাজ্য । এদের ধ্বংস বা সৃষ্টি নেই ।

৫. দুই বা ততোধিক পদার্থের পরমানুর সংযোগে নতুন পদার্থের সৃষ্টি হয় । এ সংযোগ পূর্ণ সংখ্যার নির্দিষ্ট সরল অনুপাতে হয় ।

৬. পরমানুসমূহ সরাসরি রাসায়নিক বিক্রিয়ায় অংশ নেয় ।

৭. রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় কোন পরমাণুর ধ্বংস বা সৃষ্টি হয় না । কেবলমাত্র তাদের মধ্যবর্তী সংযোগের প্রকৃতির পরিবর্তন ঘটে ।

ডাল্টনের পরমানুবাদ আধুনিক রসায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে । এ মতবাদের জন্যই ডাল্টনকে আধুনিক রসায়নের জনক বলা হয় ।

 

ডাল্টন এর পরমাণুবাদ ঃ

 

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMO2Dtgsw-p7NAw?hl=en-US&gl=US&ceid=US:en

এ মতবাদের কিছু সীমাবদ্ধতাও আছে। যা নিম্নরূপ ঃ

১. ডাল্টনের পরমানু মতবাদে মৌলিক ও যৌগিক উভয় পদার্থের ুদ্রতম অংশের নাম পরমানু বলা হয় । কিন্তু এদের মধ্যে বিশেষ কোন পার্থক্য দেখান হয়নি ।

২. এ মতবাদ অনুসারে একই মৌলের পরমানুর ভর একই । কিন্তু আধুনিক রসায়নের মতে একই মৌলের বিভিন্ন ভরের পরমানু আছে, যাদেরকে পরস্পরের আইসোটোপ বলা হয় । যেমনÑ

হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ হলঃ

(ক)প্রোটিয়াম

(খ)ডিউটেরিয়াম

(গ)ট্রিটিয়াম

৩. এ মতবাদ অনুসারে ভিন্ন ভিন্ন মৌলের পরমানু ভরে ও ধর্মে ভিন্ন । কিন্তু আধুনিক রসায়নের মতে, ভিন্ন ভিন্ন মৌলের আইসোটোপ সমূহের ভর পরস্পর সমান হতে পারে। যেমন-

নিকেল, তামা ও দস্তা এই তিনটি মৌলের একটি করে আইসোটোপ আছে যাদের প্রত্যেকের ভর ৬৪ একক ।

(ক) নিকেল

(খ) তামা

(গ) দস্তা

৪. ডাল্টনের মতবাদ অনুসারে পরমানুষমূহ অবিভাজ্য । কিন্তু আধুনিক রসায়নের কল্যানে আমরা জানি যে, পরমানুকে ভাঙলে ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন নামক স্থায়ী মৌলিক কণিকা পাওয়া যায় ।

যদিও ডাল্টনের পরমাণু মতবাদে কিছু ত্রুটি আছে, কিন্তু এটি আধুনিক রসায়নের পথিকৃৎ।

 

পারমাণবিক সংখ্যা

 

 

ডাল্টনের পরমাণুবাদ এর সীমাবদ্ধতা ঃ

 

আরও পড়ুন…

Leave a Comment