সহকারী কয়ান্টাম সংখ্যা এই বিষয়টি এইচএসসি (একাদশ-দ্বাদশ) তথা HSC (11-12) এর “অধ্যায় ২য় – গুনগত রসায়ন (Chapter 2 – Qualitative chemistry)” এর পাঠ। এছাড়া অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থার রসায়ন পাঠ্যক্রমেও রয়েছে।
সহকারী কয়ান্টাম সংখ্যা
পরমাণুতে অবস্থিত ইলেকট্রনের কক্ষপথ বা শক্তিস্তরের আকার, আকৃতি,ত্রিমাত্রিক বিন্যাস এবং নিজ অক্ষের চতুর্দিকে আবর্তনের দিক প্রকাশক সংখ্যাসমূহকে কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে। কোয়ান্টাম সংখ্যা দ্বারা কোনো পরমাণুর ইলেকট্রন এর সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা যায়।
সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা (Azimuthal Quantum Number)
যে কোয়ান্টাম সংখ্যার সাহায্যে পরমাণুর শক্তিস্তরের আকৃতি নির্ণয় করা যায় তাকে সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা বলে।একে ℓ (ছোট হাতের এল) দ্বারা প্রকাশ করা হয়। সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা ℓ এর মান প্রধান কোয়ান্টাম সংখ্যা n এর উপর নির্ভরশীল। ℓ এর মান 0 শূন্য থেকে শুরু হয়ে n-1 পর্যন্ত হতে পারে অর্থাৎ ℓ= 0,1,2,3,…n-1।
ℓ = 0 হলে s অরবিটাল, ℓ = 1 হলে p অরবিটাল, ℓ = 2 হলে d অরবিটাল এবং ℓ = 3 হলে f অরবিটাল বা উপশক্তিস্তর বোঝায়।
বিজ্ঞানী সমারফিল্ড সর্বপ্রথম সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা দেন।পরমাণুতে ইলেকট্রন আবর্তনের জন্য পরমাণুর প্রতিটি প্রধান শক্তি স্তর নির্দিষ্ট সংখ্যক উপশক্তিস্তরে বিভক্ত থাকে। একটি ইলেকট্রন কোন একটি প্রধান শক্তিস্তরের যে উপশক্তিস্তরে রয়েছে তা প্রকাশ করার জন্য সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা ব্যবহৃত হয়। কোন উপশক্তিস্তরে ধারণকৃত ইলেকট্রন সংখ্যা সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা দ্বারা নির্ণয় করা যায়।
কোন উপশক্তিস্তরে ধারণকৃত মোট ইলেকট্রন সংখ্যা = 2( 2 ℓ+1 ) টি
ℓ= 0 হলে , s উপশক্তিস্তরে ধারণকৃত ইলেকট্রন সংখ্যা = 2 টি
ℓ= 1 হলে , p উপশক্তিস্তরে ধারণকৃত ইলেকট্রন সংখ্যা = 6 টি অনুরুপভাবে, d ও f উপশক্তিস্তরে ধারণকৃত ইলেকট্রন সংখ্যা যথাক্রমে 10 টি ও 14 টি ।
প্রধান শক্তিস্তর, n = 1 হলে, ℓ = 0 অর্থাৎ ১ম শক্তিস্তরে উপশক্তিস্তর ১টি, 1s
প্রধান শক্তিস্তর, n = 2 হলে, ℓ = 0, 1. অর্থাৎ ২য় শক্তিস্তরে উপশক্তিস্তর ২টি, 2s 2p
প্রধান শক্তিস্তর, n = 3 হলে, ℓ = 0, 1, 2 অর্থাৎ ৩য় শক্তিস্তরে উপশক্তিস্তর ৩টি, 3s 3p 3d
প্রধান শক্তিস্তর, n = 4 হলে, ℓ = 0, 1, 2, 3 অর্থাৎ ৪র্থ শক্তিস্তরে উপশক্তিস্তর ৪টি, 4s 4p 4d 4f
অতএব n এর মান যত উপশক্তিস্তরের সংখ্যাও তত।
সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যাকে ইংরেজিতে সাধারণত Angular Momentum Quantum Number বলা হয়ে থাকে। যা মূলত পরমাণুর অরবিটালের আকৃতি সম্পর্কে ধারনা প্রদান করে। এছাড়াও সহকারী কোয়ান্টাম সংখ্যা – অ্যাজিমুথ্যাল কোয়ান্টাম সংখ্যা (Azimuthal Quantum Number), সেকেন্ডারি কোয়ান্টাম সংখ্যা (Secondary Quantum Number), সাবসিডিয়ারী কোয়ান্টাম সংখ্যা (Subsidiary Quantum Number) হিসেবেও পরিচিত।
উপশক্তিস্তরের নামকরণের উৎস : পর্যায় সারণির গ্রুপ-I এর ক্ষার ধাতুসমূহের পারমাণবিক বর্ণালিতে ৪ শ্রেণির রেখা বর্ণালি দেখা যায়। বিজ্ঞানীরা প্রাথমিক অবস্থায় তাদেরকে তীক্ষ্ণ বা sharp (s), প্রধান বা principal (p), পরিব্যাপ্ত বা diffused (d) ও মৌলিক বা fundamental (f) নামকরণ করে যথাক্রমে s, p, d, f প্রতীক দ্বারা এদের জন্য ℓ এর মান 0, 1, 2, 3 নির্দিষ্ট করেন।
বিজ্ঞানী সমারফিল্ড পরমাণুতে ইলেকট্রনসমূহের জন্য বাের প্রস্তাবিত প্রধান শক্তিস্তরের মধ্যে বৃত্তাকার ও উপবৃত্তাকার প্রভৃতির উপশক্তিস্তরের ধারণা প্রস্তাব করেন।
সহকারী কয়ান্টাম সংখ্যা নিয়ে বিস্তারিত ঃ
আরও পড়ুন…