ব্রনস্টেড লাউরি ও লুইস এর মতবাদ || পলিটেকনিক এর রসায়ন

ব্রনস্টেড লাউরি ও লুইস এর মতবাদ এই বিষয়টি “বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড” এর, “পলিটেকনিক” টেকনোলোজিগুলোর, রসায়ন (৬৫৯১৩) সাবজেক্ট এর অংশ। এছাড়া অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থার রসায়ন পাঠ্যক্রমেও রয়েছে।

 

ব্রনস্টেড লাউরি ও লুইস এর মতবাদ

 

ব্রনস্টেড লাউরি এর মতবাদ

 

ব্রনস্টেড-লাউরি তত্ত্ব হলো একটি অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব যা ১৯২৩ সালে জোহানেস নিকোলাস ব্রনস্টেড এবং টমাস মার্টিন লাউরি পৃথক পৃথকভাবে প্রকাশ করেন। এ তত্ত্বের মূলকথা হলোঃ যখন অম্ল ক্ষারের সাথে বিক্রিয়া করে তখন একটি প্রোটন (হাইড্রোজেন ক্যাটায়ন বা H+) বিনিময়ের মাধ্যমে অম্ল তার অনুবন্ধী ক্ষার এবং ক্ষার তার অনুবন্ধী অম্ল তৈরি করে। এ তত্ত্বটিকে আরেনিয়াসের তত্ত্বের একটা সাধারণীকরণ বলা চলে।

 

ব্রনস্টেড লাউরি

 

লুইস এর মতবাদ

রসায়নে অম্ল ও ক্ষারকে সংজ্ঞায়িত করার জন্য অন্যতম পদ্ধতি হল লুইস পদ্ধতি। এই পদ্ধতি অনুসারে যারা আম্লিক হিসাবে বিবেচিত তাদেরকে লুইস অম্ল বা লুইস অ্যাসিড এবং যারা ক্ষারীয় হিসাবে বিবেচিত হয় তাদেরকে লুইস ক্ষার বলা হয়। মার্কিন বিজ্ঞানী গিলবার্ট নিউটন লুইস এই ধারার জনক।

এই মতানুসারে যে সমস্ত যৌগ নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন জোড় গ্রহণে সক্ষম তাদেরকে লুইস অম্ল বলা হয় এবং যারা নিঃসঙ্গ ইলেকট্রন প্রদান করতে পারে তাদের লুইস ক্ষার বলা হয়। সাধারণত এই ইলেকট্রন গ্রহণ ও প্রদান অসমযোজী বন্ধন গঠনের মাধ্যমে সাধিত হয়। যেমন অ্যামোনিয়া একটি লুইস ক্ষার যা তার নিজের ইলেকট্রন অন্য যৌগকে প্রদান করতে পারে (যেমন- বোরন ট্রাইফ্লুরাইড)। এক্ষেত্রে বোরন ট্রাইফ্লুরাইড হল লুইস অম্ল।

 

ব্রনস্টেড লাউরি ও লুইস তত্ত্বের তুলনা

ব্রনস্টেড এবং লাউরি যে সালে তাদের তত্ত্ব প্রকাশ করেন, ঠিক একই সালে জি. এন. লুইস অম্ল-ক্ষার বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে একটি বিকল্প তত্ত্ব প্রদান করেন। লুইসের তত্ত্ব ছিল ইলেকট্রনের গঠনের ভিত্তিতে। যে এক জোড়া ইলেকট্রন লুইস অম্লকে দান করতে পারে তাকে লুইস ক্ষার বলা হয় যেখানে লুইস অম্ল হলো এমন একটি যৌগ যা এক জোড়া ইলেকট্রন গ্রহণ করতে পারে। লুইসের এ প্রস্তাব ইলেকট্রনের গঠনের ক্ষেত্রে ব্রনস্টেড-লাউরির শ্রেণিবিভাগের একটা সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাঁড় করায়।

A-H + B: is in equilibrium with A:+ B-H+

উপরের বিক্রিয়াতে ক্ষার (B) ও অনুবন্ধী ক্ষার (A) – উভয়ই মুক্তজোড় ইলেকট্রন বহন করছে এবং এদের মাঝে একটা প্রোটন বিনিময় হয়েছে যা একটি লুইস অম্ল।

 

লুইস পরবর্তীকালে লিখেছিলেন:

To restrict the group of acids to those substances that contain hydrogen interferes as seriously with the systematic understanding of chemistry as would the restriction of the term oxidizing agent to substances containing oxygen

 

https://news.google.com/publications/CAAqBwgKMO2Dtgsw-p7NAw?hl=en-US&gl=US&ceid=US:en

 

লুইস তত্ত্বে, একটি অম্ল (A) এবং একটি ক্ষার (B) সংযোজিত হয় (AB) যেখানে ইলেকট্রন জোড় A এবং B এর মাঝে একটা ডাইপোলার বন্ধন গঠন করে। এর দৃষ্টান্তস্বরূপ অ্যামোনিয়া ও বোরন ট্রাইফ্লুরাইড থেকে H3N-BF3গঠনের কথা বলা যায়, যে বিক্রিয়া জলীয় দ্রবণে ঘটতে পারে না কারণ বোরন ট্রাইফ্লুরাইড পানির সাথে তীব্রভাবে হাইড্রোলাইসিস বিক্রিয়া ঘটায়।

BF3+ 3H2O → B(OH)3+ 3HF
HF is in equilibrium with H++ F

এই বিক্রিয়াগুলো এটা পরিষ্কার করে যে, লুইস এবং ব্রনস্টেড-লাউরি শ্রেণিবিভাগ – উভয় ক্ষেত্রেই BF3একটি অম্ল এবং এই দুই তত্ত্বের মধ্যে এক ধরনের সামঞ্জস্য বিধান করে।

নিম্নের বিক্রিয়ার দ্বারা বোরিক এসিডকে লুইস অম্ল বলা যায়:

B(OH)3+ H2is in equilibrium with B(OH)4+ H+

এক্ষেত্রে অম্ল বিয়োজিত হয় নি বরং ক্ষার (H2O)-ই বিয়োজিত হয়েছে। কাজেই যেহেতু বিক্রিয়ার পরে হাইড্রোজেন আয়ন মুক্ত হয়েছে, তাই B(OH)3দ্রবণটি হবে অম্লীয়।

লঘু অ্যামোনিয়া দ্রবণে যে নগণ্য পরিমাণে অ্যামোনিয়াম আয়ন বিদ্যমান থাকে সে ব্যাপারে অনেক শক্তিশালী প্রমাণাদি রয়েছে:

H2O + NH3≠ OH+ NH4+

আর তাই অ্যামোনিয়া যখন পানিতে দ্রবীভূত হয়, তখন এটি লুইস ক্ষারের মতো আচরণ করে।

 

পারমাণবিক সংখ্যা

 

ব্রনস্টেড লাউরি ও লুইস এর মতবাদ নিয়ে বিস্তারিত ঃ

 

আরও পড়ুন…

Leave a Comment